প্রথম পর্বে আমরা রাভা জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী আবাসস্থল ঝিমিরিগাঁও-কে কেন্দ্র করে তাদের সংস্কৃতি ও সমাজজীবনের কিছু বিশেষ দিক তুলে ধরব।
রাভাদের মাহিরি বা উপগোষ্ঠী
ফারকান্তি নৃত্য (Farkanti Dance)
রাভা সম্প্রদায়ের বিশ্বাস, মৃত্যুই জীবনের সমাপ্তি নয়। তাদের মতে, মৃত আত্মা অবিনশ্বর এবং পুনর্জন্ম লাভ করে—শুধু মানুষ রূপে নয়, পশু ও পাখির রূপেও। এই গভীর বিশ্বাস থেকেই জন্ম নিয়েছে রাভাদের ঐতিহ্যবাহী আধ্যাত্মিক নৃত্য- ফারকান্তি নৃত্য।
নৃত্যের প্রতীকী অর্থ
💢মানচেলেংকা বান্ডিল-এ থাকে তিনটি কাঠের পাখির প্রতিরূপ—
১. মানচেলেংকা (বা মাছ লেংকা)
২. তোডেলেংকা
৩. বারেঃহে তোকা
রাভাদের বিশ্বাস, এই কাঠের পাখিদের ডানা মেলানো মৃত আত্মাকে শান্তি ও মুক্তি দেয়। একইসঙ্গে এগুলো বন্ধুত্ব, বিশ্বাস এবং আত্মার ধারাবাহিকতার প্রতীক।
অনুষ্ঠানের তাৎপর্য
ফারকান্তি নৃত্যকে অনেক সময় ‘শ্রাদ্ধ-নৃত্য’ ও বলা হয়। শোকাহত পরিবারকে সান্ত্বনা দেওয়া, মৃত আত্মার শান্তি কামনা করা এবং নতুন জীবনের পথে তাকে আশীর্বাদ জানানোই এই নৃত্যের মূল উদ্দেশ্য।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, এই নৃত্য শুধু মৃত্যু নয়, শিশুর জন্মের পর আতুর ঘর থেকে মুক্তির সময়ও পরিবেশিত হয়—আত্মাকে নতুন রূপে স্বাগত জানানোর প্রতীক হিসেবে। তবে, মৃত্যুর ক্ষেত্রে এই নৃত্য বাধ্যতামূলক।
নৃত্যের পোশাক
বাদ্যযন্ত্র: এই নৃত্যের সঙ্গে বাজানো হয় ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্র—
বর্তমান প্রেক্ষাপট:আগে ফারকান্তি নৃত্য কেবল মৃত্যুর পর বা বিশেষ ধর্মীয় উপলক্ষে পালন করা হলেও এখন এটি সাংস্কৃতিক প্রদর্শন (demonstration)-এর জন্যও পরিবেশিত হয়। তবে, রাভাদের কাছে এর আধ্যাত্মিক তাৎপর্য আজও অটুট।
We welcome thoughtful discussions. Comments are moderated for quality