বৈজ্ঞানিক নাম: Badis badis (Hamilton)
গড়ন ও আকৃতি:
পোদ কই-এর চেহারা অনেকটাই কই মাছের বাচ্চার মতো। তবে বিশেষ কিছু পার্থক্য রয়েছে—
🔹 নীচের চোয়াল তুলনামূলক বড়।
🔹 লম্বায় সাধারণত সাড়ে তিন ইঞ্চি পর্যন্ত হতে পারে।
🔹 পিঠের পাখনায় নরম কাঁটা থাকে, লেজ পাখনা গোলাকার।
রঙ ও চিহ্ন:
এই মাছের রং সাধারণত ঘন বাদামি থেকে সবজে কালো হয়ে থাকে। শরীরে ছোট ছোট কালো ছোপ ও বিন্দু দেখা যায়।
📌 কানকোর গোড়ায়, পিঠ ও লেজ পাখনার কাছে কালো বিন্দু বিশেষভাবে লক্ষণীয়।
আবাস ও স্বভাব:
পোদ কই মিঠা পানির মাছ, যা সাধারণত বিল, দীঘি, পুকুরে বসবাস করে।
✅ আশেপাশের পরিবেশের সাথে মিলিয়ে নিতে এরা শরীরের রং পাল্টাতে পারে।
✅ গবেষণায় জানা গেছে, এদের গায়ের রং পরিবর্তনের ১১টি ভিন্ন ধরন থাকতে পারে!
✅ এদের এই রং বদলের স্বভাবের কারণে ইংরেজিতে একে "Indian Chameleon Fish" বলা হয়।
✅ অ্যাকোরিয়ামে দেখা গেছে, পুরুষ পোদ কই নিজস্ব এলাকা রক্ষা করে এবং ডিম ও বাচ্চা পাহারা দেয়।
মানুষের কাছে গুরুত্ব:
🔸 গ্রামবাংলায় চুনো মাছের মধ্যে পোদ কই অনেকে খায়।
🔸 অ্যাকোরিয়ামে পালার জন্যও এই মাছের কদর রয়েছে।
সদৃশ প্রজাতি ও পার্থক্য:
🔹 তিলাপিয়া ও সাধারণ কই মাছের বাচ্চার সাথে কিছুটা মিল থাকলেও বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে।
🔹 তিলাপিয়া তুলনামূলক চওড়া ও চেপটা হয়, পোদ কই লম্বাটে গড়নের।
🔹 তিলাপিয়ার লেজ পাখনার শেষাংশ চৌকো কোদালের মতো, পোদ কইয়ের গোলাকার চামচের মতো।
🔹 কই মাছের কানকোর ধার কাটা-ছেঁড়া ও ধারালো, কিন্তু পোদ কইয়ের কানকো মসৃণ।
🔹 কই মাছের বাচ্চার গায়ে কালো ছোপ কম, অথচ পোদ কইয়ের গায়ে প্রচুর কালো দাগ থাকে।
সংকট ও বর্তমান অবস্থা:
একসময় বাংলার জলাভূমিতে প্রচুর পাওয়া গেলেও বর্তমানে পোদ কই দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে। জলদূষণ, জলাশয় ভরাট, এবং অনিয়ন্ত্রিত মাছ ধরার ফলে এই প্রজাতিটি বিলুপ্তির দিকে যাচ্ছে। এখন সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে আগামী দিনে হয়তো একে কেবল ইতিহাসের পাতাতেই খুঁজে পাওয়া যাবে!
📢 আপনার এলাকায় কি এই মাছ দেখা যায়? মন্তব্যে জানাতে ভুলবেন না! 🔽
We welcome thoughtful discussions. Comments are moderated for quality