![]() |
সামনের দিক থেকে মন্দিরটি দেখতে এই রকম। |
রানাঘাট নিস্তারিণী মন্দির
রানাঘাট শহরের বড়বাজার এলাকায় অবস্থিত নিস্তারিণী মন্দিরটি সাদামাটা হলেও কিন্তু, ঐতিহাসিক তাৎপর্য আছে ।এই মন্দিরটি দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দির প্রতিষ্ঠার ২০ বছর আগে নির্মিত হয়।কথিত আছে যে, দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরটি রানাঘাটের নিস্তারিণী মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছিল।
![]() |
বলির হাড়িকাঠ। |
রানাঘাটের ঐতিহ্য
![]() |
মন্দিরের প্রধান প্রবেশদ্বার। |
ঠিকানা:-পি. সি. স্ট্রীট, ২৪, রানাঘাট রোড,
রানাঘাট, পশ্চিমবঙ্গ - ৭৪১২০১, ভারত।
ইতিহাসের পটভূমি: একসময় এই চূর্নী নদীই ছিল কলকাতা এবং কৃষ্ণনগরের যোগাযোগের প্রধান পথ।রানি রাসমনি ভবতারিণী মন্দির প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন।মন্দির কেমন হবে তা নিয়ে বিস্তর চিন্তা ভাবনা করতে থাকেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি তার নিকট আত্মীয়দের সঙ্গেও পরামর্শ করছিলেন।সবার যুক্তি অনুযায়ী তৈরি হচ্ছিল নানা নকশা, তবে মনের মতন হচ্ছিলো না।চিন্তা ক্রমশ বাড়তে থাকে।
সেই সময় একদিন এই নদীপথে রানী রাসমনির জামাই মথুর বিশ্বাস কৃষ্ণনগরে যাচ্ছিলেন। লোকমুখে শোনা যায়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে নৌকা ঘাটে ভিড়ানো হয়। তাঁর নজরে পড়ে এই মন্দিরটি। মথুরবাবু এই মন্দিরের কাছে আসেন এবং খুব মনোযোগ দিয়ে মন্দিরটি দেখেন।
![]() |
রানাঘাট স্টেশন থেকে যাওয়ার জন্য গুগল ম্যাপ দেওয়া হল। |
তিনি ফিরে গিয়ে রাসমনিকে এই মন্দিরের কথা জানান। এবং তার পরে কলকাতা থেকে মিস্ত্রি নিয়ে আসা হয়েছিল এই মন্দির দেখার জন্য। মিস্ত্রিরা ফিরে গিয়ে এই মন্দিরের আদলেই দক্ষিণেশ্বরের মন্দির তৈরির কাজ শুরু করেন।
![]() |
মন্দিরের দেওয়ালে পঙ্খের কাজ এবং সিংহ ও কাকাতুয়া জাতীয় ভাস্কর্য। |
নিস্তারিণী মন্দিরের ইতিহাস
১৭৫৭ শকাব্দ, ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১২৪২ বঙ্গাব্দ, ইংরেজি ১৫ই জুন, ১৮৩৫ সালের সোমবার প্রতিষ্ঠিত হয় এই মন্দির। মন্দিরের নাম 'শ্রীশ্রী নিস্তারিণী কালী মাতার মন্দির'।মন্দির প্রতিষ্ঠাত্রী উজ্জ্বলমণি দাসী (স্বামী রতন চন্দ্র পালচৌধুরী)।
![]() |
দেওয়ালে রয়েছে পঙ্খের কাজ |
১২৪২ বঙ্গাব্দে, জ্যৈষ্ঠ মাসের সংক্রান্তির দিন এই মন্দিরের দ্বারোগ্ধারণ হয়েছিল। প্রতি বছর ওই দিনটিতে মন্দিরের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করা হয়। নিচে বংশতালিকার ফলকের ছবি দেওয়া হলো।
মন্দিরের দেখভাল: উজ্জ্বলমুনি দাসী কোনো সন্তান না থাকায়, এই মন্দিরের দায়িত্ব তাঁর ভাসুর এবং দেওয়রের ছেলেদের ওপর দেওয়া হয়েছিল। সেই থেকে তাদের পরিবারের ছেলেরা এই পুজো করে আসছে।বর্তমানে এই মন্দিরের দেখভাল করেন অলোকেন্দু পালচৌধুরী, অমিতেন্দু পালচৌধুরী এবং অর্ঘেন্দু পালচৌধুরী।
![]() |
নিস্তারণী কালী দেবীর বিগ্রহ। |
অর্ঘেন্দু বাবু জানান,১৭৫ বছর পূর্তী উপলক্ষে মন্দির সংস্কার করা হয়েছিল। প্রায় পাঁচ বছর সময় লেগেছে এই মন্দির সংস্কার করতে। সেই সময় মায়ের মূর্তিতে রং করা হয়।তিনি আরও জানান, শিল্পীর কাছ থেকে শোনা গেছে যে, একটি পাথর কেটেই কালী এবং শিবের মূর্তি তৈরি করা হয়েছে।
![]() |
শিবলিঙ্গ। |
![]() | |||
রানাঘাট স্টেশন যাওয়ার নির্দেশিকার জন্য ক্লিক করুন। |
We welcome thoughtful discussions. Comments are moderated for quality